জানেন টেবিল ম্যানারস কী?

আজকে আলোচনা করবো টেবিল ম্যানারস নিয়ে। যারা জানেন না তারা বলতে পারেন এটা আবার আলোচনার কী আছে? অনেক কিছুই আছে। কারণ আপনি নিজের বাড়িতে যেভাবেই খান না কেনো কোথাও গেলে কিন্তু সেটা আপনার ব্যক্তিত্বের পরিচিতি বহন করে। সঠিক টেবিল ম্যানারস যেমন আপনার ব্যক্তিত্বকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলতে পারে, তেমনি বাজে টেবিল ম্যানারস বিব্রত করতে পারে। পাঁচজনের সঙ্গে খেতে বসলে বা কোথাও বেড়াতে গেলে আপনার করণীয় কী— সেগুলোই টুকটাক বলব।

ইন শা আল্লাহ!

📌টেবিল ম্যানারস শুরু হয় চেয়ারে বসা থেকেই। চেয়ারে বসার সময় হুট করে সেটা টেবিলের সামনে টানা উচিত নয়। এতে বাজে রকম আওয়াজ হয়। তাই যদি চেয়ার সরাতে হয় সেটা আস্তে করে সরান। পাশাপাশি চেয়ার বসে পা ছড়িয়ে বসবেন না বা জোড়ে জোড়ে পা নাড়াবেন না।

📌 খাবার টেবিলে আসার সঙ্গে সঙ্গে খেতে শুরু করবেন না । আরোও কোনো ডিশ আসা বাকি থাকলে, সেটা আসার পর খাওয়া স্টার্ট করুন। শুধু তাই নয়, পাশে থাকা সঙ্গীর জন্য অপেক্ষা করুন।

📌 খাবার এলে ন্যাপকিন আপনার কোলে পেতে নিন, কলারে লাগাবেন না। খাওয়া-দাওয়া চলাকালীন কোনো কারণে চেয়ার ছেড়ে উঠতে হলে ন্যাপকিন চেয়ারে রাখুন। টেবিলে রাখবেন না।

📌 কোথাও বেড়াতে গিয়ে কখনোই বলবেন না— আমি এটা খাই না, ওটা খাই না, এগুলো আমার একদম পছন্দ না। এটা মেজবানের জন্য বিব্রতকর। আপনার পছন্দ না হলেও অল্প একটু মুখে তুলে নিবেন। বা বিনয়ের সাথে আপনার অপারগতা তুলে ধরবেন।

📌 কখনোই অল্প একটু খাবার খেয়ে বলবেন না— খেয়েছি আর খাবো না। লাইক— নুডুলস, পায়েস, সেমাই, ফিরনি, চা, শরবত। আপনি যতটুকু খেতে পারবেন ততটুকু আলাদা করে অন্য বাটিতে নিন। কারণ, আপনার মুখ দেওয়া খাবার নিশ্চয়ই অন্য কারো খেতে ভালো লাগবে না। পরে খাবারটা অপচয় হবে৷

📌 মুখে খাবার নিয়ে কথা বলবেন না বা মুখ খুলে খাবেন না। বাড়িতে বা বন্ধুদের মাঝে অনেকেই অসতর্কভাবে মুখ খুলেই খাবার খান। এটা একেবারেই করবেন না।

📌 আপনি যতই ব্যস্ত থাকুন না কেনো, খাওয়ার টেবিলে ফোনে ব্যস্ত থাকা একদমই উচিত নয়। খুব জরুরি হলে সকলের সম্মতি নিয়ে টেবিলে ছেড়ে উঠে গিয়ে ফোনে কথা বলুন।

📌 আপনার বসার জায়গা থেকে খাবার দূরে থাকলে চেয়ার ছেড়ে উঠে অসতর্কভাবে খাবরের দিকে হাত বাড়াবেন না। বরং পাশের জনকে বলুন খাবারের পাত্রটি আপনার দিকে এগিয়ে দিতে।

📌 টেবিলে খেতে বসার সময় খেয়াল রাখবেন যেন আপনার কনুই টেবিলের বাহিরে থাকে। টেবিলে কনুই রেখে খাওয়ার অভ্যাস টেবিল ম্যানারসের নিয়মের উল্টো।

📌 ঢেঁকুর তুলতে হলে মুখে ন্যাপকিন চাপা দিয়ে তুলুন।

📌 একসঙ্গে অনেক খাবার মুখে ঢোকাবেন না। বরং সময় নিয়ে ধীরে ধীরে খান অল্প অল্প করে।

📌 কোনও খাবার গরম থাকলে অহেতুক ফুঁ দিয়ে তা ঠান্ডা করার চেষ্টা করবেন না। বরং অপেক্ষা করুন। সেই সময়ে অন্যের সঙ্গে কথা বলুন। খাবার এমনিতে জুড়িয়ে যাবে। তার পর শুরু করুন।

📌 এঁটো হাতে অর্থাৎ যে হাত দিয়ে খাচ্ছেন, সেই হাত দিয়ে পানীয়ের গ্লাস ধরবেন না। সে ক্ষেত্রে অন্য হাতটি ব্যবহার করুন। যদি কাঁটাচামচে খেতে অভ্যস্ত না হন, তাহলে স্বচ্ছন্দে নিজের মতো করে হাত দিয়ে খেতে পারেন। কিন্তু তার মানেই হাত ভরিয়ে খাওয়া নয়। সে ক্ষেত্রে শুধু মাত্র আঙুল ব্যবহার করুন।

📌 খাবারের উচ্ছিষ্ট টেবিলে বা দস্তরখানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে না রেখে নির্দিষ্ট বাটিতে রাখুন।

📌 খাবার পরিবেশনের সময় অবশ্যই বয়সে যিনি বড় তার থেকে শুরু করবেন। অর্থাৎ একই দস্তরখানে বয়সে যিনি বড় তাকে প্রথম খাবার দিবেন এভাবে পর্যায়ক্রমে ছোটদের পর্ব আসবে৷

অবশ্যই খাওয়া শেষে খাবার আয়োজনকারীকে ধন্যবাদ দিতে ভুলবেন না৷ এটাও কিন্তু টেবিল ম্যানারস এর মধ্যেই পড়ে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *